(Class- 8) History | MCQ Mock Test |
---|---|
১. ইতিহাসের ধারণা | 👁 Click Here |
২. আঞ্চলিক শক্তির উত্থান | 👁 Click Here |
৩. ঔপনিবেশিক কৰ্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা | 👁 Click Here |
৪. ঔপনিবেশিক অর্থনীতির চরিত্র | 👁 Click Here |
৫. ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া : সহযোগিতা ও বিদ্রোহ | 👁 Click Here |
৬. জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক বিকাশ | 👁 Click Here |
৭. ভারতের জাতীয় আন্দোলনের আদর্শ ও বিবর্তন | 👁 Click Here |
৮. সাম্প্রদায়িকতা থেকে দেশভাগ | 👁 Click Here |
৯. ভারতীয় সংবিধান : গণতন্ত্রের কাঠামো ও জনগণের অধিকার | 👁 Click Here |
ইতিহাসের ধারণা অষ্টম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর
১. ঔরঙ্গজেব কবে মারা যান?
Ⓐ 1707 খ্রিস্টাব্দে
Ⓑ 1708 খ্রিস্টাব্দে
Ⓒ 1770 খ্রিস্টাব্দে
Ⓓ 1777 খ্রিস্টাব্দে
Answer. Ⓐ 1707 খ্রিস্টাব্দে
২. দিল্লির সিংহাসনের প্রথম নারী শাসিকা কে ছিলেন?
Ⓐ বেগম হজরতমল
Ⓑ নূরজাহান
Ⓒ গুলবদন বেগম
Ⓓ রাজিয়া
Answer. Ⓓ রাজিয়া
৩. আমাদের দৃষ্টিতে সূর্য সেন, ক্ষুদিরাম বসু প্রমুখ হলেন?
Ⓐ সমাজসেবী
Ⓑ স্বাধীনতা সংগ্রামী
Ⓒ হাঙ্গামাকারী
Ⓓ দেশদ্রোহী
Answer. Ⓑ স্বাধীনতা সংগ্রামী
৪ 'অন্ধকূপ হত্যা'-র কথা কে বলেছিলেন?
Ⓐ জেমস মিল
Ⓑ টমসন
Ⓒ হলওয়েল
Ⓓ ডডওয়েল
Answer. Ⓒ হলওয়েল
৫. মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার কবে 'রাজাবলি' বইটি লিখেছিলেন?
Ⓐ 1708 খ্রিস্টাব্দে
Ⓑ 1808 খ্রিস্টাব্দে
Ⓒ 1810 খ্রিস্টাব্দে
Ⓓ 1820 খ্রিস্টাব্দে
Answer. Ⓑ 1808 খ্রিস্টাব্দে
৬. জেমস মিল ইতিহাসকে ভাগ করেছেন?
Ⓐ তিন ভাগে
Ⓑ চার ভাগে
Ⓒ পাঁচ ভাগে
Ⓓ ছয় ভাগে
Answer. Ⓐ তিন ভাগে
৭. জেমস মিল ভারত ইতিহাসে ‘অন্ধকারময় যুগ” বলেছেন?
Ⓐ গুপ্ত যুগকে
Ⓑ মৌর্য যুগকে
Ⓒ মুসলিম যুগকে
Ⓓ ব্রিটিশ শাসনকালকে
Answer. Ⓓ ব্রিটিশ শাসনকালকে
৮. অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউমের জীবনীকার হলেন?
Ⓐ উইলিয়াম হাডসন
Ⓑ উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন
Ⓒ উইলিয়াম কোল্ট
Ⓓ উইলিয়াম গিবসন
Answer. Ⓑ উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন
৯. পূর্বপুরুষদের কাজের খতিয়ান জানার জন্য কী পড়তে হয়?
Ⓐ ভূগোল
Ⓑ ইতিহাস
Ⓒ বিজ্ঞান
Ⓓ উপরের সবগুলিই
Answer. Ⓑ ইতিহাস
১০. সিধু ও কানহুর নাম কোন বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত?
Ⓐ মুন্ডা
Ⓑ সাঁওতাল
Ⓒ চুয়াড়
Ⓓ কৃষক
Answer. Ⓑ সাঁওতাল
১১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছেলেবেলায় আমাদের ইতিহাসকে কী রকম মনে করতেন?
Ⓐ আকর্ষণীয়
Ⓑ মজার
Ⓒ একঘেয়ে
Ⓓ কৌতূহলোদ্দীপক
Answer. Ⓒ একঘেয়ে
১২. প্রকৃতিগতভাবে ইতিহাস কীসের ওপর নির্ভরশীল?
Ⓐ প্রমাণ ও যুক্তি
Ⓑ যুগ বিভাগ
Ⓒ দুর্বোধ্যতা
Ⓓ গল্প
Answer. Ⓐ প্রমাণ ও যুক্তি
১৩. কীরকম দৃষ্টিকোণের ওপর নির্ভর করে একজন ঐতিহাসিকের ইতিহাস রচনা করা জরুরি?
Ⓐ অযৌক্তিকভাবে
Ⓑ সত্যনিষ্ঠ ও নৈর্ব্যক্তিকভাবে
Ⓒ তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ না করে
Ⓓ উপরের সবগুলিই
Answer. Ⓑ সত্যনিষ্ঠ ও নৈর্ব্যক্তিকভাবে
১৪. ‘আধুনিক' শব্দটি কী থেকে এসেছে?
Ⓐ আধুনিকা' শব্দ থেকে
Ⓑ ‘অধ্যয়ন' শব্দ থেকে
Ⓒ 'অধুনা' শব্দ থেকে
Ⓓ ‘আধিভৌতিক' শব্দ থেকে
Answer. Ⓒ 'অধুনা' শব্দ থেকে
১৫. মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের লেখা বইটির নাম কী?
Ⓐ রাজতরঙ্গিনী
Ⓑ রাজাবলি
Ⓒ সোমেশ্বর
Ⓓ ইন্ডিকা
Answer. Ⓑ রাজাবলি
১৬. 'History of British India' বইটির লেখক কে?
Ⓐ কলহন
Ⓑ জেমস মিল
Ⓒ টমসন ও গ্যারাট
Ⓓ আবুল ফজল
Answer. Ⓑ জেমস মিল
1. “ভারতবাসী কোথায়, এ সকল ইতিহাস তাহার কোনো উত্তর দেয় না,” উক্তিটি কার?
➛ ভারতবাসী কোথায়, এ সকল ইতিহাস তাহার কোনো উত্তর দেয় না,”—উক্তিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।
2. সম্রাট অশোক ভারতের ইতিহাসের কোন যুগের শাসক ছিলেন?
➛ সম্রাট অশোক ভারতের ইতিহাসের প্রাচীন যুগের শাসক ছিলেন।
3. সম্রাট আকবর ভারতের ইতিহাসের কোন যুগের শাসক ছিলেন?
➛ সম্রাট আকবর ভারতের ইতিহাসের মধ্যযুগের শাসক ছিলেন।
4. 'মুদ্রা' ইতিহাসের কী ধরনের উপাদান?
➛ ‘মুদ্রা’ হল ইতিহাসের প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান।
5. মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবকে সাধারণত কোন যুগের শাসক বলা হয়?
➛ মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবকে সাধারণত মধ্যযুগের শাসক বলা হয়।
6. আমাদের পাঠ্য ইতিহাস বইয়ে কোন যুগের ইতিহাস বর্ণিত আছে?
➛ আমাদের পাঠ্য ইতিহাস বইয়ে আধুনিক যুগের ইতিহাস বর্ণিত আছে।
7. আমাদের পাঠ্য ইতিহাস বইয়ে কোন ঘটনা থেকে কোন ঘটনা পর্যন্ত আলোচিত হয়েছে?
➛ আমাদের পাঠ্য ইতিহাস বইয়ে পলাশির যুদ্ধ (1757 খ্রিস্টাব্দ) থেকে ভারতের স্বাধীনতা লাভ (1947 খ্রিস্টাব্দ) পর্যন্ত ঘটনা আলোচিত হয়েছে।
৪. কলিঙ্গ যুদ্ধ কোন ভারতীয় শাসকের আমলে হয়েছিল?
➛ কলিঙ্গ যুদ্ধ সম্রাট অশোকের আমলে হয়েছিল।
9. 'রাজাবলি' গ্রন্থটির লেখক কে?
➛ 'রাজাবলি' গ্রন্থটির লেখক মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার।
10. 'রাজাবলি' গ্রন্থের আলোচনা কোন যুগে এসে সমাপ্ত হয়েছে?
➛ ‘রাজাবলি’ গ্রন্থের আলোচনা কলিযুগে এসে সমাপ্ত হয়েছে।
11. 'History of British India' গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
➛ 'History of British India' গ্রন্থটির রচয়িতা জেমস মিল।
12. 'History of British India' গ্রন্থটির একটি ত্রুটি উল্লেখ করো।
➛ 'History of British India' গ্রন্থটিতে শাসকের ধর্মের ভিত্তিতে যুগের নামকরণ করাকে অনেকেই এর ত্রুটি বলে মনে করেছেন।
13. ভারতবর্ষের একজন উদার শাসকের নাম করো।
➛ ভারতবর্ষের একজন উদার শাসক ছিলেন সম্রাট অশোক।
14. উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন কার জীবনীকার?
➛ উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউমের জীবনীকার।
15. 'রাজাবলি' গ্রন্থটি কবে লেখা হয়েছিল?
➛ 1808 খ্রিস্টাব্দে 'রাজাবলি' গ্রন্থটি লেখা হয়েছিল।
16. কবে ‘History of British India' রচিত হয়েছিল?
➛ 1817 খ্রিস্টাব্দে 'History of British India' রচিত হয়েছিল।
17. জেমস মিল কোন দেশের বাসিন্দা ছিলেন?
➛ জেমস মিল স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা ছিলেন।
18. জেমস মিল ভারতের ইতিহাসকে ক-টি ভাগে ভাগ করেছেন?
➛ জেমস মিল ভারতের ইতিহাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন।
19. জেমস মিল তাঁর গ্রন্থে ভারতের ইতিহাসকে যে যুগ বিভাগের বিভক্ত করেছেন সেগুলির নাম লেখো।
➛ জেমস মিল তাঁর গ্রন্থে ভারতের ইতিহাসকে–(1) হিন্দু যুগ (2) মুসলিম যুগ এবং (3) ব্রিটিশ যুগে বিভক্ত করেছেন।
20. ফটোগ্রাফির একটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
➛ ফটোগ্রাফি বা ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলি থেকে সমসাময়িক আর্থসামাজিক তথা রাজনৈতিক ইতিহাস প্রসঙ্গে অনেক কিছু জানা যায়।
(Mark - 2/3)
১. জেমস মিলের ভারত ইতিহাসের যুগ বিভাগের তাৎপর্য লেখো।
➛ 1817 খ্রিস্টাব্দে জেমস মিল 'History of British India' নামে একটি বই লেখেন। বইটিতে তিনি ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করেছেন। যথা— 1. হিন্দু যুগ, 2. মুসলিম যুগ এবং 3. ব্রিটিশ যুগ।
𒀭 তাৎপর্য : জেমস মিলের প্রভাবে ইতিহাসের শ্রেণি বিভাগকে লক্ষ করলে দেখা যাবে যে প্রথম দুটি যুগ শাসকের ধর্মের নামে। আর শেষেরটি শাসকের জাতির নামে। শাসকের এভাবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী ইতিহাসের শ্রেণিবিভাগ করাটা অনেকেই মেনে নেননি।
২. 'যুগ' বলতে কী বোঝো? ইতিহাসে আধুনিক যুগ বলতে কী বোঝায়?
➛ এককথায় ‘যুগ’ বলতে একটি বড়ো সময়কে বোঝায়। ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী একই রকম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বিশেষ দীর্ঘ সময়কে যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
𒀭 আধুনিক যুগ : ‘অধুনা' শব্দ থেকে আধুনিক শব্দটি এসেছে। অবশ্য কবে থেকে ভারতের ইতিহাসে আধুনিক যুগের সূত্রপাত হয়েছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক আছে। তবে মোটামুটিভাবে 1757 খ্রিস্টাব্দ থেকে ভারতে আধুনিক যুগের সূত্রপাত হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
৩. 'রাজাবলি' গ্রন্থটি কে, কবে রচনা করেছিলেন? এর বিষয়বস্তু কী ছিল?
➛ 'রাজাবলি' গ্রন্থটি মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার 1808 খ্রিস্টাব্দে রচনা করেছিলেন।
𒀭 বিষয়বস্তু : রাজাদের বিষয়বস্তু তুলে ধরার জন্যই 'রাজাবলি' গ্রন্থটি লেখা হয়েছিল। এই গ্রন্থটির সময়পর্ব শুরু হয়েছিল মহাভারতের রাজা যুধিষ্ঠিরের সময় থেকে আর শেষ হয়েছিল কলিযুগের সময়ে এসে। তবে এই গ্রন্থটিকে ঐতিহাসিক গ্রন্থ হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিতর্ক আছে 1762 খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণ করেন মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার। 1805 খ্রিস্টাব্দে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে পণ্ডিতের পদ গ্রহণ করেছিলেন। এরপর সেখান থেকে পদত্যাগ করে তিনি 1816 খ্রিস্টাব্দে সুপ্রিমকোর্টের জজ পণ্ডিত হয়েছিলেন।
৪. ইতিহাসের উপাদান কাকে বলে? আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান প্রসঙ্গে আলোচনা করো।
𒀭 ইতিহাসের উপাদান : যেসমস্ত প্রামাণ্য তথ্য থেকে ইতিহাস রচনা করা হয় তাকে ইতিহাসের উপাদান বলে। ইতিহাসের উপাদনগুলি সাধারণত প্রত্নতাত্ত্বিক এবং সাহিত্যিক—এই দুটি ভাগে বিভক্ত ।
𒀭 আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান : আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার জন্য যেসমস্ত উপাদান ব্যবহার করা হয় সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বই, ছবি, কাগজপত্র, প্রশাসনিক তথ্য, ডায়ারি, চিঠি, জমি বিক্রির দলিল, আত্মজীবনী ইত্যাদি। আধুনিক কালের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি অনেকখানি সহজলভ্য।
৫. আত্মজীবনী কাকে বলে? আত্মজীবনীগুলি থেকে ইতিহাস রচনা করা কতটা নিরাপদ বলে তুমি মনে করো?
𒀭 আত্মজীবনী : নিজের জীবদ্দশায় ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি কোনো ব্যক্তি যদি নিজেই লিপিবদ্ধ করেন তবে তাকে আত্মজীবনী বলে। যেমন—বাবরনামা।
𒀭 ইতিহাসের উপাদান হিসেবে আত্মজীবনী : আত্মজীবনীগুলি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচারধারা থেকে লিখিত হয়। তাই এইগুলি থেকে তথ্যসংগ্রহ করে ইতিহাস রচনা করলে তা নৈর্ব্যক্তিক নাও হতে পারে। যেমন--অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউমের জীবনী লিখেছেন উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন। এই গ্রন্থে হিউমকে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু পরে অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে এই তথ্য পুরোপুরি ঠিক নয়।
(Mark - 5)
১. আমরা ইতিহাস পড়ি কেন? অথবা, ইতিহাস পড়ে আমাদের কী লাভ হয়?
𒀭 ভূমিকা : সাধারণভাবে ইতিহাস হল, অতীতে মানবসভ্যতার উন্নয়নের নানা ঘটনার পরম্পরা ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া। এটি সমাজবিজ্ঞানের একটি শাখা। সাধারণভাবে অতীতের ঘটনা জেনে আমরা বর্তমানকে বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের রূপরেখা স্থির করে ফেলি। এর ফলে বিষয় হিসেবে ইতিহাস অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতকে একসুতোয় গেঁথে তার গ্রহণযোগ্যতা ও গুরুত্বকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
𒀭 আমরা ইতিহাস পড়ি কেন : ইতিহাস পড়ার নানা কারণ রয়েছে। যেমন— ① অতীতকে জানতে : প্রকৃতিগতভাবে আমরা কৌতূহলী। আমাদের অতীতকে জানার কৌতূহল প্রচুর। সেই কৌতূহল নিবারণের জন্য আমরা ইতিহাস পড়ি। ② বর্তমানকে বুঝতে : বর্তমানের বহু ঘটনার যুক্তি অথবা কারণ লুকিয়ে রয়েছে অতীতের মধ্যে। তাই বর্তমানকে জানার জন্য আমরা ইতিহাস পড়ি (যেমন, বর্তমানে ইজরায়েল ও গাজার সংঘর্ষের মূল কারণ অতীতের বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে)। ③ মানবিক গুণের বিকাশ ঘটাতে : মূল্যবোধ, ত্যাগ, তিতিক্ষা, মানবতা, উদারতা প্রভৃতি মানবিক গুণগুলির বিকাশ ঘটাতেও আমরা ইতিহাস পড়ি। এইসব গুণগুলি প্রতিষ্ঠান ও সমাজ রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অশোক কিংবা আকবরের মতো মহান সম্রাটদের ঔদার্য আমাদের আকর্ষণ করে। ④ কল্পনা শক্তির বিকাশ ঘটাতে : ইতিহাস আমাদের মধ্যে কল্পনা শক্তির বিকাশ ঘটায়। অতীত ঘটনাবলি আমাদের কল্পনার রাজ্যে নিয়ে যায়। সিন্ধু সভ্যতা বা মিশরীয় সভ্যতার ইতিহাস আজও আমাদের আকর্ষণ করে। ⑤ যুক্তিবাদী হতে : কোনো ঘটনা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিকদের যুক্তি, পালটা যুক্তিগুলি পড়তে পড়তে আমরা বিশ্লেষক হয়ে উঠি। যুক্তিবাদী মন নিয়ে আমরা বর্তমানের ঘটনাকে বিশ্লেষণ করার জন্য ইতিহাস পড়ি।
𒀭 উপসংহার : ইতিহাস শুধু সাল, তারিখ, যুদ্ধ কিংবা রাজ-রাজাদের বর্ণনা নয়, এতে সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম সবই রয়েছে। প্রমাণ, বিশ্লেষণ, যুক্তি, ঘটনার প্রভাব ইতিহাসকে স্বতন্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
২. ভারতীয় ইতিহাসের যুগ বিভাগের সমস্যা সম্পর্কে আলোকপাত করো।
𒀭 ভূমিকা : সাধারণভাবে ভারতের ইতিহাসকে প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগ- এই তিনভাগে ভাগ করা হয়। ভারতের ইতিহাস শুরুর সময় থেকে সুলতানি যুগের সূত্রপাতের আগে পর্যন্ত প্রাচীন যুগ, সুলতানি যুগ থেকে ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু পর্যন্ত মধ্যযুগ, তারপর থেকে আধুনিক যুগ—এইভাবে ভারতের ইতিহাসের যুগ বিভাগ করা হয়েছে। এই নিয়ে তীব্র তর্কবিতর্কও আছে।
𒀭 ভারতীয় ইতিহাসের যুগ বিভাজন : ভারতীয় ইতিহাসের যুগ বিভাজন প্রসঙ্গে 1808 খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের রচিত 'রাজাবলি' নামক গ্রন্থের কথা বলা যায়। তাঁর রচনাটিতে মহাভারতের যুধিষ্ঠিরের কাল থেকে সময় গণনা শুরু হয়ে তা শেষ হয়েছে কলিযুগে। 1817 খ্রিস্টাব্দে জেমস মিল তাঁর ‘History of British India' গ্রন্থে হিন্দু যুগ, মুসলিম যুগ ও ব্রিটিশ যুগ— এই তিনভাগে ভারতের ইতিহাসকে ভাগ করেছেন। এই যুগ বিভাগই ক্রমে প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগ নামে পরিচিতি লাভ করে।
𒀭যুগ বিভাগের সমস্যা :
① নির্দিষ্ট সময়সীমায় আবদ্ধ নয় : ইতিহাসকে কোনো নির্দিষ্ট কালের সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ রাখা যায় না। যেমন, যাকে আমরা প্রাচীন যুগ বলি তার বহু প্রভাব মধ্যযুগের ঘটনার ওপর এসে পড়ে। তাই ইতিহাসকে কালের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ রাখা অসম্ভব।
② অতিসরলীকরণ দোষে দুষ্ট : অনেকটা বড়ো সময়পর্বকে যুগ বলে। প্রতিটি যুগের কিছু সুদুরপ্রসারী বৈশিষ্ট্য থাকে। ইতিহাসকে কালের গণ্ডিতে বেঁধে রাখা তাই বেশ কষ্টকর। ইতিহাসের এই যুগ বিভাজন অতিসরলীকরণ দোষে দুষ্ট ।
③ সাবলীলতায় বাধা : ইতিহাসের ঘটনাবলি নদীর মতো প্রবহমান। তাকে যুগ বিভাজনের মতো বাঁধ দিয়ে আটকানো যায় না। এতে ইতিহাসের সাবলীলতা বাধাপ্রাপ্ত হয়।
④ ঘটনা বিশ্লেষণে অক্ষমতা : মধ্যযুগে আকবর, রাজিয়া প্রমুখ শাসক বহুক্ষেত্রে আধুনিক চিন্তাভাবনার পরিচয় দিয়েছেন। তাহলে তাঁদেরকে কি মধ্যযুগের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ রাখা যুক্তিযুক্ত হবে? অথচ আমাদের বর্তমান যুগ বিভাজনে সেই কাজটিই করা হয়েছে।
৩. ভারতীয় ইতিহাসের আধুনিককালের উপাদানগুলি সম্পর্কে লেখো।
𒀭 ভূমিকা : ইতিহাস রচনা করার জন্য যেসব প্রামাণ্য তথ্য বা উপাদান ব্যবহার করা হয়, তাকেই ইতিহাসের উপাদান বলে। প্রাচীনকালে ইতিহাসের উপাদানগুলি যেরূপ ছিল, বর্তমানকালে তা নেই। বর্তমানকালের উপাদানসমূহের প্রাচুর্য ও লভ্যতা বেশি। প্রয়োজন শুধু ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেগুলির বিচারবিশ্লেষণ।
𒀭 আধুনিককালের উপাদানসমূহ : ভারতীয় ইতিহাসের আধুনিককালের উপাদানগুলির রকমফের আছে। যেমন— ① লিখিত উপাদান : গত চার-পাঁচশো বছরের লিখিত উপাদানগুলি ভারতীয় ইতিহাসের আধুনিককালের উপাদান হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। লিখিত উপাদানগুলির মধ্যে বই, আত্মজীবনী, পত্রিকা, সংবাদপত্র, পোস্টার সবই পড়ে। তবে এগুলি থেকে তথ্যসংগ্রহের জন্য অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। লিখিত উপাদান বৈদেশিক ও ভারতীয় এই দুই প্রকার।
② ফটোগ্রাফ : ফটোগ্রাফ আধুনিককালের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়। ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি ছবিগুলি ইতিহাসের অনেক বিরল মুহূর্তের সাক্ষী। তবে ফটোগ্রাফারের ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ তার ছবির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তাই এ ব্যাপারে সতর্কতা আবশ্যিক।
③ প্রশাসনিক নথিপত্র : প্রশাসনিক নথিপত্রে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের দৃষ্টিকোণ প্রকাশিত হয়। যেমন—ব্রিটিশ নথিপত্রে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনগুলিকে ‘হাঙ্গামা' বা ‘উৎপাত' হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
④ ভারতীয় গ্রন্থ : আধুনিককালে ভারতীয়দের দ্বারা লিখিত বহু গ্রন্থ উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। বলাবাহুল্য এগুলি ভারতীয় দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী লিখিত হওয়ায় তা ঔপনিবেশিকদের দৃষ্টিকোণের সঙ্গে পার্থক্য সৃষ্টি করে। হলওয়েল যে ‘অন্ধকূপ হত্যা’র কথা লিখেছেন, তা আধুনিককালের ভারতীয় ঐতিহাসিকরা যুক্তি দিয়ে মিথ্যা বলে প্রমাণ করেছেন।
𒀭 উপসংহার : প্রাচীনকালের ইতিহাসের উপাদানের মতো, আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনায় উপাদানের স্বল্পতা নেই। প্রয়োজন সঠিক তথ্যসংগ্রহ করে নিরপেক্ষ ইতিহাস রচনা করার ।
৪. জেমস মিল ভারতের ইতিহাসের যে যুগ বিভাগ করেছেন তাঁর জুটি কোথায়? ইতিহাসের যুগ বিভাজনের সমস্যাগুলি কী কী?
𒀭 ভূমিকা : জেমস মিল তাঁর 'History of British India' নামক গ্রন্থে ভারতের ইতিহাসকে হিন্দু, মুসলিম ও ব্রিটিশ যুগ নামে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন। মিলের লেখা বইটির উদ্দেশ্য ছিল- ① ভারতের ইতিহাসকে একত্রিত করা। ② ব্রিটিশ প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ভারতবর্ষ সম্পর্কে জানানো। ③ ব্রিটিশ ঐতিহ্যকে তুলে ধরা।
𒀭 মিলের যুগ বিভাজনের ত্রুটি : মিল যেভাবে ভারতের ইতিহাসের যুগ বিভাগ করেছেন তা নিয়ে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যেমন- ① সাম্প্রদায়িক মানসিকতা : মিল যেভাবে ধর্মের ভিত্তিতে হিন্দু যুগ বা মুসলিম যুগ হিসেবে ভাগ করেছেন তা সাম্প্রদায়িক মানসিকতার পরিচয় দেয়। ② ভ্রান্তি পর্ব : মিলের হিন্দু যুগ শুধুমাত্র হিন্দুদের ছিল না। এই পর্বে জৈন বা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অনেকেই ছিল। মিল যেভাবে মুসলিম যুগকে 'অন্ধকারময় যুগ' বলে উল্লেখ করেছেন, তাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ ও ভ্রান্ত।
𒀭 যুগ বিভাজনের সমস্যা :
① ইতিহাসকে এইভাবে তিনটি যুগের মধ্যে বন্দি করা অযৌক্তিক। ② একটি যুগের ঘটনার প্রভাব অন্য যুগকে প্রভাবিত করে। ③ প্রাচীন যুগ কিংবা মধ্যযুগের বহু শাসক আধুনিকমনস্ক ছিলেন। সেই কারণে তাঁদেরকে কোনো যুগের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখাটা ঠিক নয় বলে অনেকের মত। ④ এক একটি যুগের নিজস্ব ধরন থাকে, যা রাতারাতি বদল করা যায় না। ⑤ ইতিহাসের যুগ বিভাজন নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।
Tags : ইতিহাসের ধারণা class 8,class 8 history chapter 1,অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস সহায়িকা pdf,আঞ্চলিক শক্তির উত্থান class 8,class 8 ইতিহাস প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর