ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক MCQ Mock Test

Esita Afrose
0
 
সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় MCQ প্রশ্ন উত্তর
(Class- VII) History MCQ Mock Test
১. ইতিহাসের ধারণা 👁 Click Here
২. ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা
খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক
👁 Click Here
৩. ভারতের সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কয়েকটি ধারা
খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক
👁 Click Here
৪. দিল্লি সুলতানি : তুর্কো-আফগান শাসন 👁 Click Here
৫. মুঘল সম্রাজ্য 👁 Click Here
৬. নগর, বণিক ও বাণিজ্য 👁 Click Here
৭. জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি : সুলতানি ও মুঘল যুগ 👁 Click Here
৮. মুঘল সাম্রাজ্যের সংকট 👁 Click Here
৯. আজকের ভারত : সরকার, গণতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসন 👁 Click Here

 ২. ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক MCQ Mock Test  👇

1. সুলতান মামুদ ভারত আক্রমণ করেছিলেন?

Ⓐ 15 বার
Ⓑ 16 বার
Ⓒ 17 বার
Ⓓ 100 বার

2. তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে জয়লাভ করেছিল?

Ⓐ কুতুবউদ্দিন আইবক
Ⓑ মহম্মদ ঘোরি
Ⓒ বখতিয়ার খলজি
Ⓓ শামসউদ্দিন

3. বখতিয়ার খলজি জয় করেন?

Ⓐ দিল্লি
Ⓑ হুগলি
Ⓒ নদিয়া
Ⓓ মুশির্দাবাদ

4. আমরা ভারতের যে অংশে থাকি তার নাম?

Ⓐ পার্টনা
Ⓑ পশ্চিমবঙ্গ
Ⓒ ওড়িশা
Ⓓ কেরল

5. 'অর্থশাস্ত্র' গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

Ⓐ রামপাল
Ⓑ লক্ষ্মণসেন
Ⓒ কৌটিল্য
Ⓓ বিশাখদত্ত

6. কালিদাসের 'রঘুবংশম্' কাব্যে কোন দুটি অঞ্চলের উল্লেখ পাওয়া যায়?

Ⓐ বঙ্গ ও সূম্ম
Ⓑ বরেন্দ্র ও বঙ্গ
Ⓒ বঙ্গ ও বরেন্দ্র
Ⓓ রাঢ়-সূম্ম

7. ‘সুবা' কথাটির অর্থ?

Ⓐ দেশ
Ⓑ প্রদেশ
Ⓒ অঞ্চল
Ⓓ রাজ্য

8. কত খ্রিস্টাব্দে দেশভাগ হয়েছিল?

Ⓐ 1945 খ্রিস্টাব্দে
Ⓑ 1946 খ্রিস্টাব্দে
Ⓒ 1947 খ্রিস্টাব্দে
Ⓓ 1949 খ্রিস্টাব্দে

9. নিম্নোক্ত কোন স্থানের একটি অঞ্চল হল সমতট?

Ⓐ বাংলা
Ⓑ কাশ্মীর
Ⓒ বিহার
Ⓓ পশ্চিমবঙ্গ

10. প্রাচীন বাংলার অঞ্চলগুলির মধ্যে বৃহত্তম ছিল?

Ⓐ পুণ্ড্রবর্ধন
Ⓑ বঙ্গ
Ⓒ রাঢ়
Ⓓ বরেন্দ্র

11. উত্তর ও দক্ষিণ রাঢ়ের মাঝের সীমানা ছিল?

Ⓐ অজয় নদ
Ⓑ দামোদর নদ
Ⓒ সরস্বতী নদী
Ⓓ ময়ূরাক্ষী নদী

12. শশাঙ্কের রাজধানী ছিল?

Ⓐ কনৌজ
Ⓑ মগধ
Ⓒ কর্ণসুবর্ণ
Ⓓ তাঞ্জোর

13. প্রাচীন বাংলার একটি নগর হল?

Ⓐ কনৌজ
Ⓑ ডান্ডি
Ⓒ বারুচ
Ⓓ কর্ণসুবর্ণ

14. যশোবর্মণের রাজকবি কে ছিলেন?

Ⓐ কৌটিল্য
Ⓑ বাকপতিরাজ
Ⓒ প্রথম কৃষ্ণ
Ⓓ দন্তিদুর্গ

15. ‘হর্ষচরিত' গ্রন্থটির রচয়িতা?

Ⓐ হর্ষবর্ধন
Ⓑ হরিষেণ
Ⓒ লক্ষ্মণসেন
Ⓓ বাণভট্ট

16. কার মৃত্যুর পর মাৎস্যন্যায় শুরু হয়েছিল?

Ⓐ শশাঙ্ক
Ⓑ গোপাল
Ⓒ প্রথম রাজেন্দ্র চোল
Ⓓ লক্ষ্মণসেন

17. পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?

Ⓐ দেবপাল
Ⓑ গোপাল
Ⓒ ধর্মপাল
Ⓓ রামপাল

18. কৈবর্তরা পেশায় ছিল?

Ⓐ নৌকার মাঝি
Ⓑ কর্মকার
Ⓒ কৃষক
Ⓓ ছুতোর

19. রামপালের রাজধানী কোথায় ছিল?

Ⓐ ক্ষ্মণাবতী
Ⓑ তাঞ্জোর
Ⓒ রামাবতী
Ⓓ কর্ণাটক

20. দন্তিদুর্গ কোন বংশের নেতা ছিলেন?

Ⓐ চালুক্য
Ⓑ রাষ্ট্রকূট
Ⓒ কুষাণ
Ⓓ চোল

21. কোন বংশের শাসক ছিলেন রাজা ভোজ?

Ⓐ গুর্জর-প্রতিহার
Ⓑ চোল
Ⓒ রাষ্ট্রকুট
Ⓓ সেন

22. কোন অঞ্চলের অধিকারকে কেন্দ্র করে ত্রিশক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল?

Ⓐ কর্ণসুবর্ণ
Ⓑ মগধ
Ⓒ কনৌজ
Ⓓ রামাবতী

23. সেন রাজাদের আদি বাসস্থান ছিল কোন অঞ্চলে?

Ⓐ বরেন্দ্র
Ⓑ সুবর্ণভূমি
Ⓒ লক্ষ্মণাবতী
Ⓓ কর্ণাট

24. ভারতের কোন অংশে চোলরা তাদের রাজত্ব গড়ে তুলেছিল?

Ⓐ উত্তর
Ⓑ দক্ষিণ
Ⓒ পূর্ব
Ⓓ পশ্চিম

25. চোল রাজ্য কে প্রতিষ্ঠা করেন?

Ⓐ প্রথম রাজরাজ
Ⓑ বিজয়ালয়
Ⓒ প্রথম রাজেন্দ্র
Ⓓ কোনোটিই নয়

26. সেন বংশের শেষ রাজা কে ছিলেন?

Ⓐ লক্ষ্মণসেন
Ⓑ বল্লালসেন
Ⓒ বিক্রমসেন
Ⓓ কোনোটিই নয়

27. কত বছরব্যাপী ত্রিশক্তি সংগ্রাম চলেছিল?

Ⓐ 100 বছর
Ⓑ 200 বছর
Ⓒ 300 বছর
Ⓓ 400 বছর

28. কোন গ্রন্থ থেকে কৈবর্ত বিদ্রোহের কথা জানা যায়?

Ⓐ রামচরিত
Ⓑ রামায়ণ
Ⓒ অর্থশাস্ত্র
Ⓓ রাজাবলী

29. কৈবর্ত বিদ্রোহের অবসান ঘটান?

Ⓐ ধর্মপাল
Ⓑ দেবপাল
Ⓒ রামপাল
Ⓓ প্রথম রাজরাজ

30. রামপালের মৃত্যুর কত বছরের মধ্যে পাল বংশের অবসান হয়?

Ⓐ 50 বছর
Ⓑ 100 বছর
Ⓒ 150 বছর
Ⓓ 200 বছর

31. কোন অঞ্চলে পাল রাজাদের আদি নিবাস ছিল?

Ⓐ পুণ্ড্রবর্ধন
Ⓑ সমতট
Ⓒ রাঢ়
Ⓓ বরেন্দ্র

32. মাৎস্যন্যায়ের অবসান ঘটান?

Ⓐ শশাঙ্ক
Ⓑ ধর্মপাল
Ⓒ গোপাল
Ⓓ দেবপাল

33. কত খ্রিস্টাব্দে বখতিয়ার খলজির মৃত্যু হয়?

Ⓐ 1205 খ্রিস্টাব্দে
Ⓑ 1206 খ্রিস্টাব্দে
Ⓒ 1207 খ্রিস্টাব্দে
Ⓓ 1209 খ্রিস্টাব্দে

34. বঙ্গ নামটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়?

Ⓐ ঐতরেয় আরণ্যকে
Ⓑ ব্রাহ্মণে
Ⓒ সংহিতায়
Ⓓ উপনিষদে

35. মিনহাজ-ই-সিরাজ ছিলেন একজন?

Ⓐ সাহিত্যিক
Ⓑ ঐতিহাসিক
Ⓒ বিজ্ঞানী
Ⓓ দার্শনিক

36. মুঘল আমলে বাংলাকে বলা হত?

Ⓐ বেঙ্গল
Ⓑ বেঙ্গালা
Ⓒ বঙ্গ
Ⓓ বরাল

37. স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়?

Ⓐ 1961 খ্রিস্টাব্দে
Ⓑ 1965 খ্রিস্টাব্দে
Ⓒ 1971 খ্রিস্টাব্দে
Ⓓ 1978 খ্রিস্টাব্দে

38. প্রাচীন বাংলায় সীমানা প্রধানত ক-টি নদী দিয়ে তৈরি হয়েছিলন?

Ⓐ দুটি
Ⓑ তিনটি
Ⓒ চারটি
Ⓓ পাঁচটি

39. ভাগীরথী ও করতোয়া নদীর মধ্যবর্তী এলাকা পরিচিত ছিল?

Ⓐ বরেন্দ্র নামে
Ⓑ বঙ্গ নামে
Ⓒ বঙ্গাল নামে
Ⓓ রাঢ়

40. প্রাচীনকালে ‘বঙ্গ’ দেশটির আকৃতি কেমন ছিল?

Ⓐ চতুর্ভুজাকার
Ⓑ আয়তাকার
Ⓒ গোলাকার
Ⓓ ত্রিভুজাকার

41. দক্ষিণ রাঢ়কে বলা হত?

Ⓐ বজ্জভূমি
Ⓑ সুবভভূমি
Ⓒ পবিত্রভূমি
Ⓓ সুবর্ণভূমি

42. উত্তর রাঢ়কে বলা হত?

Ⓐ পবিত্রভূমি
Ⓑ বজ্জভূমি
Ⓒ সুবভভূমি
Ⓓ সুবর্ণভূমি

43. গৌড়ের শাসক ছিলেন?

Ⓐ সমুদ্রগুপ্ত
Ⓑ দেবপাল
Ⓒ শশাঙ্ক
Ⓓ গোপাল

44. প্রাচীন সমতট ছিল?

Ⓐ সীমান্তবর্তী
Ⓑ মধ্যবর্তী
Ⓒ অনুকূলবর্তী
Ⓓ প্রতিকূলবর্তী

45. শশাঙ্ক কোন ধর্মীয় বিশ্বাসী ছিলেন?

Ⓐ বিষ্ণুর উপাসক
Ⓑ সূর্যের উপাসক
Ⓒ শিবের উপাসক
Ⓓ বৃক্ষের উপাসক

46. বাংলায় প্রথম নির্বাচিত রাজা কে ছিলেন?

Ⓐ দেবপাল
Ⓑ ধর্মপাল
Ⓒ গোপাল
Ⓓ শশাঙ্ক

47. বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে?

Ⓐ রক্তমৃত্তিকায়
Ⓑ উজ্জয়িনীতে
Ⓒ সমতটে
Ⓓ রাঢ় অঞ্চলে

48. ‘সকলোত্তরপথনাথ' উপাধি গ্রহণ করেছিলেন?

Ⓐ দেবপাল
Ⓑ হর্ষবর্ধন
Ⓒ ভাস্করবর্মা
Ⓓ গোপাল

49. শশাঙ্কের সময় কামরূপের রাজা কে ছিলেন?

Ⓐ ভাস্করবর্মা
Ⓑ দেবপাল
Ⓒ রামপাল
Ⓓ ধর্মপাল

50. বাণভট্ট ছিলেন?

Ⓐ শশাঙ্কের সভাকবি
Ⓑ সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি
Ⓒ হর্ষবর্ধনের সভাকবি
Ⓓ চন্দ্রগুপ্তের সভাকবি

51. 'আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প' একটি?

Ⓐ হিন্দু গ্রন্থ
Ⓑ বৌদ্ধ গ্রন্থ
Ⓒ জৈন গ্রন্থ
Ⓓ কোনোটিই নয়

52. বাংলায় মাৎসন্যায় স্থায়ী হয়েছিল?

Ⓐ 50 বছর
Ⓑ 75 বছর
Ⓒ 100 বছর
Ⓓ 150 বছর

53. বাংলায় পাল বংশের রাজত্ব শুরু হয়?

Ⓐ আনুমানিক 640 খ্রিস্টাব্দে
Ⓑ আনুমানিক 750 খ্রিস্টাব্দে
Ⓒ আনুমানিক 806 খ্রিস্টাব্দে
Ⓓ আনুমানিক 810 খ্রিস্টাব্দে

54. কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা ছিলেন?

Ⓐ রুদোক
Ⓑ গোপাল
Ⓒ দেবপাল
Ⓓ উপরের কেউই নয়

55. কৈবর্তদের হাতে নিহত হয়েছিলেন?

Ⓐ দেবপাল
Ⓑ রামপাল
Ⓒ গোপাল
Ⓓ মহীপাল

56. রাজা মিহিরভোজ ছিলেন?

Ⓐ গুর্জর-প্রতিহার বংশের রাজা
Ⓑ সেন বংশের রাজা
Ⓒ পাল বংশের রাজা
Ⓓ ভোজ বংশের রাজা

57. সেন বংশের কোন রাজা সমাজসংস্কারক ছিলেন?

Ⓐ বল্লালসেন
Ⓑ বিজয়সেন
Ⓒ লক্ষ্মণসেন
Ⓓ হরিসেন

58. ভারতের পশ্চিমে আছে?

Ⓐ ভারত মহাসাগর
Ⓑ বঙ্গোপসাগর
Ⓒ আরব সাগর
Ⓓ শ্রীলংকা

59. আরব উপজাতির প্রধান জীবিকা ছিল?

Ⓐ বাণিজ্য
Ⓑ পশুপালন
Ⓒ কৃষি
Ⓓ কোনোটিই নয়

60. হজরত মহম্মদ জন্মগ্রহণ করেন?

Ⓐ 570 খ্রিস্টাব্দে
Ⓑ 572 খ্রিস্টাব্দে
Ⓒ 575 খ্রিস্টাব্দে
Ⓓ 577 খ্রিস্টাব্দে

61. কোন শব্দটি ইসলামীয় সাল গণনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়?

Ⓐ খ্রিস্টাব্দ
Ⓑ বঙ্গাব্দ
Ⓒ হিজরি
Ⓓ শকাব্দ

62. খলিফা শব্দের অর্থ কী?

Ⓐ প্রতিনিধি
Ⓑ ঈশ্বরের সেবক
Ⓒ কর্মচারী
Ⓓ দাসত্ব

63. ভারতে প্রথম মুসলমান অভিযান কবে শুরু হয়?

Ⓐ সিন্ধু প্রদেশে
Ⓑ দিল্লিতে
Ⓒ লাহোরে
Ⓓ কাশ্মীরে

64. কোন নদী ব্যবস্থাকে ঘিরে চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল?

Ⓐ গঙ্গা
Ⓑ কাবেরী
Ⓒ নর্মদা
Ⓓ সবরমতী


☞ Text Book Answer : Class 7 

𒀭𒀭𒀭 Question Mark-2/3  
১. হিজরত কাকে বলে?
➺ খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের শুরুতে মক্কাবাসীদের প্রচলিত ধর্মীয় আচার-আচরণের সঙ্গে মহম্মদের ধর্মীয় মতের পার্থক্য দেখা দেয়। এই কারণে 622 খ্রিস্টাব্দে হজরত মহম্মদ ও তাঁর অনুগামীরা মক্কা থেকে মদিনা শহরে চলে আসেন। মহম্মদ এবং তাঁর অনুগামীদের মক্কা থেকে মদিনায় চলে যাওয়ার ঘটনাকেই আরবি ভাষায় হিজরত বলা হয়।

২. অল-বিরুনি কে ছিলেন?
➺ অল-বিরুনি : অল-বিরুনি ছিলেন একজন বিখ্যাত দার্শনিক ও গণিত বিষয়ে পণ্ডিত ব্যক্তি। তিনি গজনির সুলতান মাহমুদের সময় পর্যটক হিসেবে ভারতে আসেন। ভারতে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘কিতাব অল-হিন্দ' গ্রন্থ লেখেন। ভারতের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ।

৩. তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধের গুরুত্ব লেখো।
তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধের গুরুত্ব : 1192 খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে মহম্মদ ঘোরি রাজপুত রাজা তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করেন। এই যুদ্ধের গুরুত্ব হল- ① দিল্লিতে সুলতানি শাসনের ভিত্তি স্থাপিত হয়। ② ভারতে প্রচলিত যুদ্ধপদ্ধতির থেকে তুর্কি যুদ্ধপদ্ধতি বহুগুণ এগিয়ে সেটি প্রমাণিত হয়। ③ রাজপুতদের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে।

৪. খলিফা কাদের বলা হয়?
➺ হজরত মহম্মদের পরবর্তীকালে কে ইসলাম জগতে নেতৃত্ব দেবেন—এই প্রশ্ন উঠতে থাকে। এমন অবস্থায় হজরত মহম্মদের চারজন প্রিয় শিষ্য একে একে নেতা নির্বাচিত হন। এরা ছিলেন আবুবকর, ওমর, ওসমান এবং আলি। এদেরই ‘খলিফা’ বলা হয়। খলিফা হলেন ইসলামীয় জগতের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক নেতা। খলিফা শব্দটি আরবি শব্দ যার অর্থ প্রতিনিধি বা উত্তরাধিকারী। খলিফার অধিকৃত অঞ্চলের নাম খিলাফৎ।

৫. শশাঙ্ক কে ছিলেন?
➺ প্রথম জীবনে শশাঙ্ক ছিলেন গুপ্ত সম্রাট মহাসেনগুপ্তের মহাসামন্ত। পরবর্তী জীবনে 606-607 খ্রিস্টাব্দের কিছু সময় পূর্বে তিনি স্বাধীন শাসক হয়ে গৌড়ের সিংহাসনে বসেন। শশাঙ্কের আমলে গৌড় রাজনৈতিকভাবে আরও গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে উঠেছিল। উত্তর ভারতের শক্তিশালী শাসক হর্ষবর্ধনের সঙ্গে তার শত্রুতার কথা সাহিত্যিক উপাদান থেকে জানা যায়। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম সার্বভৌম রাজা। শশাঙ্কের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ।

৬. গৌড়তন্ত্র কী?
➺ শশাঙ্কের শাসনকালে গৌড়ে যে শাসনব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল তাকে গৌড়তন্ত্র বলা হত। এই ব্যবস্থায় রাজ্যের আমলারা গ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ করতেন। আলোচ্য সময়ে গৌড়ে কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা চালু ছিল।

𒀭𒀭𒀭 Question Mark- 5  
১. কৈবর্ত বিদ্রোহ সম্বন্ধে যা জানো লেখো।
অথবা, টীকা লেখো : কৈবর্ত বিদ্রোহ
➺ একাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বা আনুমানিক 1070-71 খ্রিস্টাব্দে পালরাজা দ্বিতীয় মহীপালের শাসনকালে কৈবর্ত বিদ্রোহ হয়েছিল।
①  কৈবর্তদের পরিচয় ও বাসস্থান :  কৈবর্তরা সম্ভবত নৌকার মাঝি বা জেলে ছিল। তখনকার বাংলার উত্তরভাগে বসবাসকারী কৈবর্তদের সেখানে বেশ প্রভাব ছিল।
উপাদান : সন্ধ্যাকর নন্দীর ‘রামচরিত' কাব্য থেকে কৈবর্ত বিদ্রোহের কথা জানা যায় বলে এটি এই বিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।
নেতা : কৈবর্ত বিদ্রোহের তিনজন নেতার কথা জানা যায়। তাঁরা হলেন দিব্য দিব্বোক, রুদোক এবং ভীম। এদের মধ্যে দিব্য বা দিব্বোক-এর নেতৃত্বে কৈবর্ত বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল।
বিদ্রোহের কারণ : কৈবর্ত বিদ্রোহের কারণ প্রসঙ্গে একাধিক মত রয়েছে। যেমন—অনেকের মতে পাল রাজা দ্বিতীয় মহীপালের অত্যাচারে ক্ষুদ্ধ হয়ে কৈবর্তরা বিদ্রোহ করেছিল। আবার অপর একটি মতানুযায়ী, পাল রাজাদের দুর্বলতার সুযোগে পাল রাষ্ট্রের কর্মচারী দিব্যর নেতৃত্বে কৈবর্তরা বিদ্রোহ করেছিল। 
বিদ্রোহের পরিণাম : দ্বিতীয় মহীপাল বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে দিব্যর  হাতে পরাজিত ও নিহত হন। দিব্য বরেন্দ্র অঞ্চল দখল করে সেখানকার রাজা হন। দিব্যর মৃত্যুর পর রুদোক এবং ভীম বরেন্দ্র অঞ্চল শাসন করেন। পাল শাসক রামপাল বরেন্দ্র অঞ্চল উদ্ধার করতে গিয়ে প্রথমে ব্যর্থ হলেও পরবর্তীকালে তিনি বাংলা এবং বিহারের বিভিন্ন সামন্ত নায়কদের সাহায্য নিয়ে ভীমকে পরাজিত ও হত্যা করে বরেন্দ্রভূমি পুনরুদ্ধার করে। এইভাবে কৈবর্ত বিদ্রোহের অবসান হয়।
উপসংহার : কৈবর্ত বিদ্রোহ পাল শাসনের ভীত নড়িয়ে দিয়েছিল। এর ফলে পাল শাসনের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

২. পাল রাজাদের সম্পর্কে যা জানো তা সংক্ষেপে তোমার নিজস্ব ভাষায় লেখার চেষ্টা করো।
➺ বাংলায় দীর্ঘ একশো বছরের মাৎস্যন্যায় অবস্থার অবসান ঘটিয়ে বাংলায় পাল শাসনের সূচনা হয়েছিল।
পাল বংশের শাসক বর্গ :
গোপাল : পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল তাঁর শাসনকালে (আনুমানিক 750-78 খ্রিস্টাব্দে) তিনি বাংলার অধিকাংশ অঞ্চলকে শাসনের আওতায় এনেছিলেন। তাঁর সব চেয়ে বড়ো কৃতিত্ব হল তিনি বাংলাকে মাৎস্যন্যায় মুক্ত করে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ধর্মপাল : গোপালের যোগ্য উত্তরাধিকারী ছিলেন ধর্মপাল। (আনুমানিক 774-836 খ্রিস্টাব্দ)। উত্তর ভারতের কনৌজকে কেন্দ্র করে যে ত্রিশক্তি সংগ্রাম চলেছিল তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন ধর্মপালের সাম্রাজ্য বাংলা থেকে জলন্ধর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
দেবপাল : ধর্মপালের পুত্র দেবপাল (আনুমানিক 806 – 45 খ্রিস্টাব্দ) উত্তর এবং দক্ষিণ ভারতে পাল সাম্রাজ্য বিস্তার করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁর শাসনকালে উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে বিন্ধ্যপর্বত পর্যন্ত এবং পূর্বে প্রাগজ্যোতিষপুর থেকে উত্তর-পশ্চিমে কম্বোজ পর্যন্ত পাল সাম্রাজ্য ছড়িয়ে পড়েছিল।
পরবর্তী পাল শাসকগণ : দেবপালের শাসনকালের পর থেকে (অর্থাৎ আনুমানিক 845 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) প্রথম মহীপালের সিংহাসন আরোহণের সময় (আনুমানিক 977 খ্রিস্টাব্দ) পর্যন্ত পাল বংশের গৌরব অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তবে প্রথম মহীপালের শাসনকালে (আনুমানিক 977-1027 খ্রিস্টাব্দ) পাল শাসকদের গৌরব অনেকটাই ফিরে আসে। এরপর দ্বিতীয় মহীপালের শাসনকালে কৈবর্ত বিদ্রোহের কারণে পাল বংশে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তা পরবর্তী পাল শাসক রামপাল সমাধান করেছিলেন। রামপাল (শাসনকাল আনুমানিক 1072-1126 খ্রিস্টাব্দ) ওই বিদ্রোহের অবসান ঘটিয়ে বরেন্দ্রভূমি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন।

উপসংহার : পাল শাসনকাল বাংলার ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায় সূচনা করেছিল। কিন্তু পাল শাসক রামপালের মৃত্যুর পরবর্তী পঞ্চাশ বছরের মধ্যেই ওই বংশের পরবর্তী শাসকদের অযোগ্যতা ও দুর্বলতায় পাল বংশের পতন ঘটে।

৩. বাংলায় তুর্কি আক্রমণ সম্পর্কে মিনহাজ-ই-সিরাজ-এর বিবরণের সত্যতা সম্পর্কে লেখো। 18 জন ঘোড় সওয়ার কি সত্যিই রাজধানী নদিয়া জয় করেছিলেন?
➺ বাংলায় তুর্কি আক্রমণের (আনুমানিক 1204-05 খ্রিস্টাব্দ) প্রায় চল্লিশ বছর পর ঐতিহাসিক মিনহাজ-ই-সিরাজ বাংলায় এসেছিলেন। তখন বখতিয়ার খলজির অভিযানের কাহিনি লোকমুখে শুনে বাংলায় নদিয়ায় তুর্কি আক্রমণের কাহিনি লিখেছিলেন।

𒀭 বাংলায় তুর্কি আক্রমণ সম্পর্কে মিনহাজ -ই-সিরাজের বিবরণের সত্যতা যাচাই : ঐতিহাসিক বিবরণ সব সময় সত্য নাও হতে পারে। অনেক সময় লোকমুখে বিভিন্ন ঘটনা শুনে লেখকগণ সেগুলির সঙ্গে নিজের কল্পনা মিশিয়ে লিখে দেওয়ার চেষ্টা করতেন। যেমন— মিনহাজ-ই-সিরাজ বখতিয়ার খলজির বাংলায় আক্রমণ প্রত্যক্ষ করেননি। কিন্তু তিনি বাংলায় তুর্কি আক্রমণের চল্লিশ বছর পর বাংলায় এসে লোকমুখে শুনে হয়তো নিজের মতো করে আক্রমণের বিবরণ লিখেছিলেন। তাঁর লেখা “তবাকাত-ই-নাসিরি' গ্রন্থ থেকে জানা যায়, নদিয়া আক্রমণের সময় বখতিয়ার খলজির সঙ্গে মাত্র 18 জন ঘোড়সওয়ার ছিলেন। তাই তাঁর এই বিবরণের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ থেকে যায়।

𒀭 18 জন ঘোড়সওয়ার নিয়ে নদিয়া জয়ের সত্যতা : কথিত আছে, বখতিয়ার খলজির সঙ্গে মাত্র 18 জন ঘোড়সওয়ার ছিল এবং তাদের নিয়েই তিনি নদিয়া জয় করেছিলেন। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়। কারণ সেখানে উত্তর ভারত থেকে বাংলায় আসার একাধিক রাস্তা ছিল। সাধারণত বিহার থেকে বাংলায় আসার সময় রাজমহল পাহাড়ের উত্তরদিকের পথ ধরেই আসতে হত। রাজা লক্ষ্মণসেনও ওই পথেই তুর্কি আক্রমণ ঠেকানোর জন্য তাঁর সৈন্য মোতায়েন করেছিলেন। কিন্তু বখতিয়ার খলজি তাঁর সৈন্যদের কয়েকটি ছোটো ছোটো দলে ভাগ করে বর্তমান ঝাড়খণ্ডের দুর্গম জঙ্গলের পথ দিয়ে বাংলায় এসেছিলেন। তাই তর্কিদের আসার কথা শুনে লক্ষ্মণসেন প্রতিরোধ না করে পূর্ববঙ্গের দিকে চলে যান। এমন অবস্থায় সুরক্ষিত না থাকা রাজধানী নদিয়া জয় করা বখতিয়ার খলজির পক্ষে সহজ হয়েছিল। 

৪. গৌড়ের রাজা শশাঙ্কের কৃতিত্ব আলোচনা করো।
➺ শশাঙ্ক ছিলেন গুপ্ত শাসক মহাসেনগুপ্তের মহাসামন্ত। তিনি গৌড়ে একটি স্বাধীন রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
𒀭 শশাঙ্কের কৃতিত্ব :
স্বাধীন গৌড়ের প্রতিষ্ঠা : শশাঙ্কের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আনুমানিক 606 খ্রিস্টাব্দে গৌড়ে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়। সিংহাসন লাভের পর শশাঙ্ক দক্ষিণ বঙ্গ ও পূর্ববঙ্গ অধিকার করে সমগ্র বাংলায় তাঁর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। শশাঙ্কের আমলে গৌড় ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিল। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত শশাঙ্ক গৌড়ের স্বাধীন শাসক ছিলেন। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল কর্ণসুবর্ণ।
②  রাজ্য বিজেতা : শশাঙ্ক ছিলেন একজন রাজ্য বিজেতা। তাঁর শাসনকালে উত্তর ভারতের কনৌজ, মালব, স্থানীশ্বর (থানেশ্বর), কামরূপ, গৌড় প্রভৃতি আঞ্চলিক শক্তিগুলি নিজেদের স্বার্থে কখনও পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, বা মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় রাখত। শশাঙ্কও সেই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সমগ্র গৌড়দেশ, মগধ-বুদ্ধগয়া অঞ্চল এবং ওড়িশার কিছু অংশ নিজের অধিকারে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। উত্তর ভারতের ক্ষমতাশালী রাজ্যগুলির সঙ্গে সংগ্রাম করে তিনি গৌড়ের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছিলেন।
সামরিক দক্ষতা : বিভিন্ন রাজ্যজয় করে গৌড়ের সীমানাবৃদ্ধি তাঁর সামরিক দক্ষতা প্রমাণ করে। উত্তর ভারতের সেই সময়কার শক্তিশালী শাসক হর্ষবর্ধন পর্যন্ত শশাঙ্ককে হারাতে পারেননি।
ধর্মীয় ক্ষেত্র : ব্যক্তিগত জীবনে শশাঙ্ক শিবের উপাসক ছিলেন। তবে কোনো কোনো বৌদ্ধগ্রস্থ এবং চিনের পর্যটক সুয়ান জাৎ তাঁকে বৌদ্ধবিদ্বেষী বলেছেন। কিন্তু শশাঙ্কের মৃত্যুর পরবর্তী সময় বাংলায় বৌদ্ধধর্মের উন্নতি চোখে পড়ায় তাঁকে বৌদ্ধবিদ্বেষী বলা অতিরঞ্জিতই মনে হয়েছে।
সুশাসক : শশাঙ্কের শাসনকালে গৌড়ের শাসনব্যবস্থা ‘গৌড়তন্ত্র' নামে পরিচিত। এই ব্যবস্থায় শশাঙ্ক তাঁর রাজ্যের কর্মচারী বা আমলাদের দ্বারা একটা নির্দিষ্ট শাসন প্রণালী গড়ে তুলেছিলেন। শশাঙ্কের আমলে গৌড়ে সরকার পরিচালনা করা হত কেন্দ্ৰীয়ভাবে।

উপসংহার : শশাঙ্কের সুদক্ষ নেতৃত্ব, পরাক্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে বাংলা একটি শক্তিশালী সর্বভারতীয় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার যথার্থই বলেছেন, “বাঙালি রাজাদের মধ্যে সর্বপ্রথম সার্বভৌম নরপতি ছিলেন শশাঙ্ক।”

৫. টীকা লেখো : কর্ণসুবর্ণ।
অথবা, প্রাচীনকালে বাংলার কর্ণসুবর্ণ নগর প্রসঙ্গে কী জানো?
➺ শশাঙ্কের শাসনকালে প্রাচীন গৌড়ের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। কর্ণসুবর্ণ স্থানীয় ভাবে 'কানসোনা' নামেও পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গের মুরশিদাবাদ জেলার চিরুটি রেল স্টেশনের কাছাকাছি অঞ্চলটি কর্ণসুবর্ণ নামে পরিচিত ছিল। স্থানীয়ভাবে এটিকে 'রাজা কর্ণের প্রাসাদ' নামেও উল্লেখ করা হয়।

প্রাচীন ঐতিহাসিক প্রত্নস্থল : মুরশিদাবাদের চিরুটি রেলস্টেশনের কাছে রাজবাড়িডাঙায় প্রাচীন রক্তমৃত্তিকা বা রাঙামাটিতে বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। চিনের পর্যটক সুয়ান জাং (হিউয়েন সাঙ)-এর বর্ণনায় এটির উল্লেখ আছে। এই বৌদ্ধ বিহারটিকে চিনা ভাষায় লো-টো-মো-চিহ্ব লা হয়েছে। প্রাচীন এই ঐতিহাসিক প্রত্নস্থলটির নিকটবর্তী স্থানই ছিল কর্ণসুবর্ণ।

বৈশিষ্ট্য : সুয়ান জাং-এর বিবরণ থেকে জানা যায়, কর্ণসুবর্ণ অঞ্চলটি ছিল জনবহুল। সেখানকার জমি নীচু ও আর্দ্র, জলবায়ু ছিল নাতিশীতোষ্ণ। কর্ণসুবর্ণে নিয়মিত কৃষিকাজ চলত, প্রচুর ফলমূল হত। সেখানকার মানুষেরা অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং চরিত্রবান ছিলেন। তারা শিক্ষাদীক্ষার পৃষ্ঠপোষকতাও করতেন। কর্ণসুবর্ণে বৌদ্ধ এবং শৈব-উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই বসবাস বাণিজ্য ও প্রশাসনিক কেন্দ্র : সেকালে কর্ণসুবর্ণ বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। পার্শ্ববর্তী গ্রামের সঙ্গে এখানকার নাগরিকদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের আদানপ্রদান হত। শশাঙ্কের আমলের থেকেই সম্ভবত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। কর্ণসুবর্ণ গৌড়ের রাজধানী হওয়ায় প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
রাজনৈতিক পালাবদল : কর্ণসুবর্ণের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বারবার পালাবদল ঘটতে দেখা গেছে। শশাঙ্কের মৃতুর পর স্বল্প সময়ের জন্য এটি কামরূপের রাজা ভাস্করবর্মা দখল করেন। এরপর কিছু সময় এটি ছিল নাগ শাসক জয়নাগের রাজধানী।

উপসংহার : শশাঙ্কের পরবর্তী সময়ে কর্ণসুবর্ণের গুরুত্ব হ্রাস পায়। সপ্তম শতকের পরবর্তীকালে এটির কথা আর বিশেষ কিছু জানা যায় না। পাল ও সেন যুগের ঐতিহাসিক উপাদানগুলিতেও এটির কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)